শসায় অনেক ধরণের গুণাগুণ রয়েছে পাকা পেঁপের মতো। সারা বিশ্বজুড়ে শসা অনেক পরিচিত। শসা ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। শসা কাচা বা রান্না করে খেলেও অনেক ধরণের স্বাস্থ্য উপকার পাওয়া যায়। শসায় আছে ভিটামিন এ, সি এবং প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেণ্ট। ত্বকের পরিচর্যায় শসা ব্যাবহার করে আপনি পেতে পারেন দাগহীন, কোমোল, সুন্দর ও ফর্শা ত্বক। অনেক বেশি পানি যুক্ত হওয়ার কারণে শসা ত্বকের অসামঞ্জস্য দূর করতে সাহায্য করে। শসার রস ত্বক থেকে রোদে পড়া ভাব দূর করতে বিশেষ ভাবে কার্যকরী। শসা ব্রণের কালো বা বাদামী দাগ দূর করতেও সাহায্য করে।
শসার ফেস মাস্ক বানাবেন যেভাবেঃ
শসার ফেস মাস্ক ব্যাবহারে ত্বকের বড় লোমকূপের আকার ছোটো হয়। আপনি শসার নিয়মিত ব্যাবহারে ত্বকের রং ফর্শা করতে পারেন। আসুণ জেনে নেই, কীভাবে ত্বকের যত্নে শসা ব্যাবহার করবেন।
১। শসা, পুদিনা ও দুধের ফেশ মাস্কঃ
শসা, পুদিনা ও দুধের মাশক ব্যাবহারে ত্বক ফর্শা হবে এবং সজীব হয়ে উঠবে।
– শসার বিচি ফেলে দিয়ে ২ টেবিল চামচ শসার পেস্ট
– ১০-১২ টি পুদিনার পেস্ট
– ১ চামচ কাচা দুধ
– আধা চামচ বেসন
সব উপকরণ গুলো মিশিয়ে খুব ভালো ভাবে পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর ফেশ ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে মাস্কটি লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট শসার মাস্কটি রাখুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩ দিন ব্যাবহার করুন এই মাস্ক। শসার এই মাস্কটি আপনার ত্বক থেকে রোদে পড়া ও অন্যান্য কালো দাগ দূর করবে। আপনার মুখে যদি অনেক বেশিই রোদে পোড়া দাগ হয়, তাহলে এই মাস্কটি প্রতিদিন একবার করে ২ সপ্তাহ ব্যাবহার করলেই রোদে পোড়া দাগ একদম চলে যাবে।
২। ওটমিল ও শসার মাস্কঃ
শসার এই মাস্কটি তৈলাক্ত ও শুষ্ক ত্বকের জন্য খুব উপকারী। যাদের ত্বকে অনেক বেশী ব্রণ ও বড় বড় লোমকূপ আছে, এই শসার মাস্কটি তাদের জন্য বেশ উপকারী। ওটমিল পাউডার ত্বকের হারানো মলিনতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল দূর করে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
– ২ টেবিল চামচ ওটমিল পাউডার বা গুঁড়া
– ১ চামচ মধু
– ২ টেবিল চামচ শসার রস
– পেস্ট করতে গোলাপ জল বা দুধ ব্যাবহার করুন।
ওটমিল গুঁড়া, মধু, দুধ ও শসার রস মিশিয়ে নিন। পরিষ্কার মুখে শসার মাস্ক টি লাগিয়ে নিন। ৩০ মিনিট রেখে হাল্কা কুশুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ বার এই মাস্কটি ব্যাবহার করলেই আপনি পাবেন ফর্শা, দাগহীন, সজীব ও কোমল ত্বক।
৩। চালের গুঁড়া ও শসার মাস্কঃ
চালের গুঁড়া ও শসার মাস্ক আপনার মুখের বলিরেখা, দাগ ও বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করবে।
– ২ টেবিল চামচ চালের গুঁড়া
– শসার পেস্ট ২ টেবিল চামচ
– কয়েক ফোঁটা লেবুর রস
– গোলাপ জল বা পানি পরিমাণ মতো পেস্ট করার জন্য
শসার পেস্ট এর সাথে একে একে চালের গুঁড়া, লেবুর রস ও গোলাপ জল বা পানি মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে নিন। মাস্কটি গোসলের আগে লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়। মাস্কটি লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন বা গোসল করে নিন। ধোয়ার সময় ঘষে ঘষে মাস্কটি তুলে ফেলুন। এতে করে মুখের ময়লা পরিষ্কার হবে ও লোমকূপের আকার ছোটো হবে।
৪। দই ও শসার মাস্কঃ
দই ও শসার মাস্ক ব্যাবহার করলে আপনার ত্বক হবে কোমল এবং কালো দাগ ও রোদে পোড়া ভাব দূর হবে।
– ২ টেবিল চামচ শসার পেস্ট
– ১ টেবিল চামচ দই
– ২ চিমটি হলুদের গুঁড়া
দই, হলুদের গুঁড়া ও শসার পেস্ট মিশিয়ে নিন ভালো করে। মুখে লাগিয়ে নিন ২০ মিনিটের জন্য। হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ বার এই মাস্কটি ব্যাবহারে আপনার ত্বক থেকে কালো দাগ দূর হবে। তাছাড়া এই মাস্কটি আপনার ত্বকের সজীবতা বজায় রাখবে ও ফর্শা করবে।
৫। মুলতানি মাটি, টোম্যাটো ও শসার মাস্কঃ
রোদে পোড়া ভাব দূর করতে এই মাস্ক এর কোন তুলনা হয় না। শসা ও টোম্যাটোর রসে ভিটামিন সি আছে যা ত্বকের ভিতরে গিয়ে ব্যাকটেরিয়া দমন করে। মুলতানি মাটি ত্বক ফর্শা করে ও কালো দাগ দূর করে। শসার রস ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে এবং রোদে পোড়া ভাব দূর করে।
– ১ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি
– ১ টেবিল চামচ টোম্যাটোর পেস্ট
– ২ টেবিল চামচ শসার পেস্ট
শসার পেস্টের সাথে মুলতানি মাটি ও টোম্যাটোর রস মিসিয়ে মাস্ক বানিয়ে নিন। মীখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩ দিন এই মাস্কটি ব্যাবহার করুন। এটি আপনার ত্বক থেকে ব্রণের সমস্যা দূর করবে ও ফর্শা করবে।
৬। ডিমের সাদা অংশ ও শসার মাস্কঃ
অনেক বেশি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য শসা বেশ উপকারী। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ত্বকে ব্রণ, কালো দাগ ও কালো লোমকূপ এর সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
– একটি ডিমের সাদা অংশ
– ২ টেবিল চামচ শসার পেস্ট
– আধা চামচ নিম বা পুদিনা পাতার পেস্ট
ডিমের সাদা অংশকে প্রথমে কাটা চামচ দিয়ে নেড়ে খুব ভালো করে ফেণা করে নিন। তারপর শসা ও পুদিনা/নিম এর পেস্ট মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে নিন। মুখে লাগিয়ে মাস্কটি ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার এই মাস্কটি ব্যাবহার করে আপনি তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
ঘরে বসে ত্বকের সকল সমস্যার সমাধান পেতে পারেন শসার মাস্ক ব্যাবহার করে। তাই রুটিন করে ব্যাবহার করুন শসার মাস্ক এবং ত্বকের সমস্যা গুলোকে রোধ করুন।
0 comments:
Post a Comment